Popunder

ads top



নাটোরের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে তিন দিন ধরে অপেক্ষা করছেন তিনি। আজ শুক্রবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত উড়োজাহাজের টিকিট হাতে পাননি হাবিবুর। যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য সাড়ে ছয় লাখ টাকা জমা দিয়েছেন, তারাও এখন আর ফোন ধরছে না।

বিকেলে বিমানবন্দরের টার্মিনাল-১-এর সামনে বসে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ফোনের অপেক্ষায় আছেন হাবিবুর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জমি বন্ধক রেখে ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সাড়ে ছয় লাখ টাকা কোম্পানিকে দিয়েছেন। কোম্পানির লোকেরা মালয়েশিয়ায় পাঠাবেন বলে তিন দিন আগে তাঁকে বিমানবন্দরে নিয়ে এসেছেন। এখন আর তাঁরা ফোন ধরছেন না। তিনি কোম্পানির অফিসে লোক পাঠিয়েছিলেন, সেখান থেকে তাঁকে অপেক্ষা করতে বলা হয়ে 

হাবিবুর রহমান আক্ষেপ করে বলেন, ‘দেশে কৃষিকাজ করে কষ্ট করে সংসার চালাতাম। সংসারে একটু সচ্ছলতা আনতে ঋণ করে ও জমি বন্ধক রেখে বিদেশে যাওয়ার উদ্যোগ নিই। বিদেশে যেতে না পারলে কীভাবে সংসার চালাব, ঋণ পরিশোধ করব?’

শুধু হাবিবুর নয়, মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে আজ হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছেন। তাঁরা বলছেন, আজকের পর থেকে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া আর কোনো শ্রমিক নেবে না। আজকের মধ্যে যেতে না পারলে তাঁরা আর মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন না। অনেক টাকা খরচ করেছেন, এখন বিদেশে যেতে না পারলে দুর্ভোগের শেষ থাকবে না।

চক্র তৈরি করে কর্মী পাঠানোয় অনিয়মের ঘটনায় চার বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালে বাংলাদেশিদের জন্য আবার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলে। তখন আবারও চক্র গঠন করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গত মার্চে মালয়েশিয়া জানায়, দেশটি আপাতত আর শ্রমিক নেবে না। যাঁরা অনুমোদন পেয়েছেন, ভিসা পেয়েছেন, তাঁদের ৩১ মের (আজ শুক্রবার) মধ্যে মালয়েশিয়ায় ঢুকতে হবে।

444444

কিন্তু এরই মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে (রিক্রুটিং এজেন্সি) টাকা দেওয়া বহু মানুষ এখন বিপদে পড়েছেন। সময় আর হাতে না থাকায় উড়োজাহাজের টিকিট ছাড়াই তাঁরা এখন বিমানবন্দরে এসে ভিড় করেছেন

এমন আরেকজন নরসিংদীর রুবেল মিয়া নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতে মালয়েশিয়ায় যেতে চান। এ জন্য আহাদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ছয় লাখ টাকা দিয়েছেন তিনি। দুদিন ধরে ঢাকার বিমানবন্দরে আরেক ভাইয়ের সঙ্গে অপেক্ষা করছেন তিনি। রুবেল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখনো উড়োজাহাজের টিকিট হাতে পাইনি। ফোন দিলে কোম্পানির লোকেরা বলছেন, তাঁরা ব্যবস্থা করবেন। তাঁদের কথায় বিশ্বাস করে দুই দিন ধরে এখানে অপেক্ষা করছি।’

হাবিব ও রুবেল ছাড়াও মালয়েশিয়ায় যেতে বিমানবন্দরে হাজির হওয়া আরও অন্তত ১০ জন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সময় বাড়াতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, পাঁচ থেকে সাত লাখ করে টাকা তাঁরা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দিয়েছেন। এখন যেতে না পারলে বিপদে পড়বেন। কোম্পানিগুলো তাঁদের দেওয়া টাকা ফেরত দেবে কি না, সেই সংশয়ও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।

মালয়েশিয়াগামী যাত্রীদের ভিড় সম্পর্কে জানতে চাইলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম আজ প্রথম আলোকে বলেন, দুই দিন ধরে মালয়েশিয়াগামী অনেক যাত্রীর চাপ রয়েছে। বাড়তি এই চাপ সামলাতে নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি অতিরিক্ত ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

Share on Google Plus

About somrat

Ut wisi enim ad minim veniam, quis nostrud exerci tation ullamcorper suscipit lobortis nisl ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis autem vel eum iriure dolor in hendrerit in vulputate velit esse molestie consequat, vel illum dolore eu feugiat nulla facilisis at vero eros et accumsan et iusto odio dignissim qui blandit praesent luptatum zzril delenit augue duis.

0 Comments:

Post a Comment